হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর মহামূল্যবান বাণী [পার্ট ১]
♥♥আসসালামু আলাইকুম♥♥
♥সবাই কেমন আছেন?আশা করি সবাই ভালো আছেন।আর আপনাদের দোয়ায় আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
পোস্টের বিষয়ঃ
আবারও একটি ইসলামিক পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মহামূল্যবান বাণী।আশা করি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবাই পড়বেন।
আল্লাহ
১.জান্নাতের চাবি হলো – ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নাই’ এ সাক্ষ্য দেয়া। (আহমদ)
শব্দার্থ : ‘ইলাহ’ মানে হুকুমকর্তা, আইনদাতা, আশ্রয়দাতা, ত্রাণকর্তা, উপাস্য, প্রার্থনা শ্রবণকারী।
২. আল্লাহ সুন্দর! তিনি সৌন্দর্যকেই পছন্দ করেন। (সহীহ মুসলিম)
৩. শ্রেষ্ঠ কথা চারটি :
ক. সুবহানাল্লাহ – আল্লাহ পবিত্র,
খ. আল হামদুলিল্লাহ – সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর,
গ. লা–ইলাহা ইল্লাল্লাহ – আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই,
ঘ. আল্লাহু আকবর – আল্লাহ মহান। (সহীহ মুসলিম)
আল্লাহর অধিকারঃ
৪.বান্দাহর উপর আল্লাহর অধিকার হলো, তারা কেবল তাঁরই আনুগত্য ও দাসত্ব করবে এবং তাঁর সাথে কোনো অংশীদার বানাবেনা। (সহীহ বুখারী)
ঈমানঃ
৫.বলো : ‘আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি ; অতপর এ কথার উপর অটল থাকো। (সহীহ মুসলিম)
৬. ঈমান না এনে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। (তারগীব)
৭. যে কেউ এই ঘোষণা দেবে : ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নাই আর মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহর রসূল’ – আল্লাহ তাকে জাহান্নামের জন্যে নিষিদ্ধ করে দেবেন।(সহীহ বুখারী)
ঈমান থাকার লক্ষণঃ
৮. তুমি মুমিন হবে তখন, যখন তোমার ভালো কাজ তোমাকে আনন্দ দেবে, আর মন্দ কাজ দেবে মনোকষ্ট। (আহমদ)
ইসলামঃ
৯.সব কাজের আসল কাজ হলো ‘ইসলাম’। (আহমদ)
১০. কোনো বান্দাহ ততোক্ষণ পর্যন্ত মুসলিম হয়না, যতোক্ষণ তার মন ও যবান মুসলিম না হয়। (তাগরীব)
পবিত্রতাঃ
১১.পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। (সহীহ মুসলিম)
১২. যে পূত পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে পূত পবিত্র রাখেন। (সহীহ বুখারী)
সালাতঃ
১৩.সালাত জান্নাতের চাবি। (আহমদ)
শব্দার্থ : সালাত – নামায। জান্নাত – বেহেশত।
১৪. সালাত হলো ‘নূর’। (সহীহ মুসলিম)
১৫. সালাত আমার চক্ষু শীতলকারী। (নাসায়ী)
১৬. পবিত্রতা সালাতের চাবি। (আহমদ)
১৭. সালাত মুমিনদের মি’রাজ। (মিশকাত)
শব্দার্থ : মি’রাজ মানে – উর্ধ্বে গমন করা বা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা।
১৮. যে পরিশুদ্ধ হয়না, তার সালাত হয়না। (মিশকাত)
১৯. সাত বছর বয়স হলেই তোমাদের সন্তানদের সালাত আদায় কতে আদেশ করো। (আবু দাউদ)
২০. কিয়ামতের দিন পয়লা হিসাব নেয়া হবে সালাতের। (তাবরানি)
২১. আল্লাহর অনুগত দাস আর কুফরীর মাঝে মিলন সেতু হলো সালাত ত্যাগ করা। (সহীহ মুসলিম)
২২. যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্যে সালাত পড়লো, সে শিরক করলো। (আহমদ)
সাওমঃ
২৩.সাওম একটি ঢাল। (মিশকাত)
শব্দার্থ : সাওম – রোজা।
২৪. সাওম এবং কুরআন বান্দার জন্যে সুপারিশ করবে। (বায়হাকী)
২৫. যখন রমযান শুরু হয়, তখন রহমতের দুয়ার খুলে দেয়া হয়। (সহীহ বুখারী)
২৬. তোমাদের মাঝে বরকতময় রমযান মাস এসেছে। আল্লাহ তোমাদের উপর এ মাসের সিয়াম সাধনা ফরয করে দিয়েছেন। (নাসায়ী)
হজ্জ ও উমরাঃ
২৭. হজ্জ ও উমরা পালনকারীরা আল্লার মেহমান। (মিশকাত)
আল্লাহর পথে জিহাদঃ
২৮.আল্লাহর পথে একটি সকাল কিংবা একটি সন্ধ্যা ব্যয় করা গোটা পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের চেয়ে উত্তম। (সহীহ বুখারী)
২৯. যে লড়ে যায় আল্লাহর বাণীকে বিজয়ী করার জন্যে সেই আল্লাহর পথে ( জিহাদ করে )। (সহীহ বুখারী)
৩০. অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা সবচেয়ে বড় জিহাদ। (তিরমিযী)
জ্ঞানার্জনঃ
৩১.রাত্রে ঘন্টাখানেক জ্ঞান চর্চা করা সারা রাত জেগে ( ইবাদতে নিরত ) থাকার চেয়ে উত্তম। (দারমী)
৩১.রাত্রে ঘন্টাখানেক জ্ঞান চর্চা করা সারা রাত জেগে ( ইবাদতে নিরত ) থাকার চেয়ে উত্তম। (দারমী)
৩২. যে জ্ঞানের সন্ধানে বের হয়, সে আল্লাহর পথে বের হয়। (তিরমিযী)
৩৩. আমার পরে সবচেয়ে বড় দানশীল সে, যে কোনো বিষয়ে জ্ঞান লাভ করলো, অতপর তা ছড়িয়ে দিলো। (বায়হাকী)
আল কুরআনঃ
৩৪.সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব। (সহীহ মুসলিম)
৩৫. কুরআনকে আঁকড়ে ধরো, তাহলে কখনো বিপথগামী হবেনা। (মিশকাত)
৩৬. কুরআন পরিবারের লোকেরা আল্লাহর পরিবার এবং তাঁর বিশেষ লোক। (নাসায়ী)
৩৭. তোমরা আল্লাহর কিতাবকে আঁকড়ে ধরো। এর হালালকে হালাল বলে গ্রহণ করো এবং এর হারামকে হারাম বলে বর্জন করো। (হাকিম)
৩৮. যে আল্লাহর কিতাবের পথ ধরে সে দুনিয়াতে বিপথগামী হয়না এবং পরকালে হয়না দুর্ভাগা। (মিশকাত)
৩৯. আমার উম্মতের সম্মানিত লোক হলো কুরআনের বাহক আর রাতের সাথীরা (বায়হাকী)
রাসূল ও সুন্নাহঃ
৪০. সর্বোত্তম জীবন পদ্ধতি হচ্ছে মুহাম্মদ সাঃ প্রদর্শিত পদ্ধতি। (সহীহ মুসলিম)
৪১. যে আমার আনুগত্য করলো সে আল্লাহর আনুগত্য করলো। (সহীহ বুখারী)
৪২. যে আমাকে অমান্য করলো সে আল্লাহকে অমান্য করলো। (সহীহ বুখারী)
৪৩. যে আমার সুন্নতকে ভালোবাসলো সে আমাকে ভালোবাসলো। (সহীহ মুসলিম)
৪৪. যে আমার সুন্নত থেকে বিমুখ হলো, সে আমার লোক নয়। (সহীহ মুসলিম)
৪৫. আমি আল্লাহর কাছে শেষ নবী হিসেবে লিখিত আছি। (শরহে সুন্নাহ)
নিয়্যত
৪৬.কাজ নির্ভর করে নিয়্যতের উপর।(সহীহ বুখারী)
নোট : নিয়্যত মানে -উদ্দেশ্য,সংকল্প,ইচ্ছা,কোনো নির্দিষ্ট কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া।‘কাজ নির্ভর করে নিয়্যতের উপর’ মানে কাজের পেছনে মানুষের যে উদ্দেশ্য, সংকল্প বা সিদ্ধান্ত থাকে, তার ভিত্তিতেই সে ফল ও পুরস্কার লাভ করবে।
৪৭. প্রত্যেক ব্যক্তি তার কাজের সেই ফলই পাবে,যা সে নিয়্যত করেছে।[সহীহ বুখারী)
৪৮. আল্লাহ তোমাদের চেহারা সুরত ও ধনসম্পদ দেখবেননা,তিনি দেখবেন তোমাদের অন্তর ও কাজ [সহীহ মুসলিম)
নোট :এখানে অন্তর মানে -উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বা নিয়্যত।
এই তিনটি হাদীস থেকে আমরা মানব জীবনে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বা নিয়্যতের গুরুত্ব জানতে পারলাম।সুতরাং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই যাবতীয় কাজ করা উচিত।
নৈতিক চরিতঃ
৪৯.মহত চরিত্রের পূর্ণতা দানের জন্যে আমার আগমন। [মুআত্তায়ে মালিক)
শব্দার্থ :‘আখলাকুন’ও‘খুলুকুন’ মানে -নৈতিক চরিত্র,ব্যবহার,আচার আচরণ।
৫০. উত্তম চরিত্রের চাইতে বড় মর্যাদা আর নেই।[ইবনে হিব্বান)
৫১. ঈমানের পূর্ণতা লাভকারী মুমিন তারা,যাদের নৈতিক চরিত্র সর্বোত্তম।[মিশকাত)
৫২. তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানুষ তারা,যাদের আচার ব্যবহার সবচেয়ে ভালো।[সহীহ বুখারী)
৫৩.আল্লাহর নবীর চরিত্র ছিলো ঠিক কুরআনের মতো।(আয়েশা রাঃ সহীহ মুসলিম)
আজ এখানেই শেষ করছি,সবাই ভালো থাকুন সুস্হ থাকুন
No comments